Wednesday, July 27, 2022

ইরাবতী কার্বে

ইরাবতী কার্বে

অ্যানথ্রপলজি বা নৃবিদা হল মানুষ নিয়ে পড়াশোনা করা এটি বিজ্ঞানের সেই শাখা যা মানুষের উৎপত্তি, বিকাশ, তাদের আচরণ, সংস্কৃতি, তাদের নানাবিধ প্রথা, বিশ্বাস প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করে ভারতবর্ষে নৃবিদ্যা পড়াশোনা খুব পুরোনো যদিও ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভারতে নৃবিদ্যার সূচনা বলে অনেকে মনে করেন কিন্তু এর পেছনে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই ভারতবর্ষে নৃবিদ্যার সূচনা ধরা হয় উনবিংশ শতাব্দীতে বিভিন্ন পণ্ডিত ব্যক্তি এই নিয়ে গবেষণা করেন শিক্ষাক্ষেত্রে নৃবিদ্যা বিভাগ প্রথম চালু হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে মনে করা হয় প্রথম ভারতীয় নৃততত্ববিদ ও নৃবিজ্ঞানী হলেন শরৎচন্দ্র রায়। তাঁকে ভারতীয় নৃতত্ত্বের জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। এরপর দিল্লি, লক্ষ্নৌ, গুয়াহাটি প্রভৃতি জায়গায় নৃবিদ্যা বিভাগ চালু হয় পাশাপাশি বহু বিশ্ব বিদ্যালয় তাদের পাঠ্যক্রমে নৃবিজ্ঞানকে একটি বিষয় হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে এভাবে একটু একটু করে বিংশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষে নৃবিদ্যা বিস্তারলাভ করে এই নিয়ে যারা কাজ করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ডিন.এন. মজুমদার, এল.কে. অনন্তকৃষ্ণ আইয়ার, আর.পি. চন্দা, জিন.এস. ঘুরে, এন.কে. বেসি প্রমুখ প্রথমদিকে এই বিষয়টি নিয়ে মূলত পুরুষরাই পড়াশোনা ও গবেষণা করতেন মহিলারা সেভাবে এই বিষয়ে আকৃষ্ট ছিলেন না প্রথমত সে সময় মহিলাদের পড়াশোনার ব্যাপার তেমন উৎসাহ দেওয়া হত না পাশাপাশি এই বিষয়ের জন্য প্রচুর ফিল্ড স্টাডি করতে হত যা মহিলাদের পক্ষে সেই সময় ছিল বেশ কষ্টসাধ্য ও সমস্যাজনক ফলে মহিলারা এই বিষয়ে আসতেন না তবে ব্যতিক্রমী ছিলেন ইরাবতী কার্বে গতানুগতিক ভাবধারার বাইরে গিয়ে তিনি এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ইরাবতী কার্বে হলেন ভারতের প্রথম মহিলা নৃতত্ত্ববিদ পুনে বিশ্ব বিদ্যালয়ে তিনি নৃবিদ্যা দপ্তর স্থাপন করেছিলেন

    ১৯০৫ খ্রস্টাব্দের ১৫ ডিসেম্বর বার্মার মিয়াংগানে ইরাবতীর জন্ম বর্মার পবিত্র নদী ইরাবতীর নামে বাবা-মা তার নাম রাখেন ইরাবতী তাঁদের পরিবার ছিল সম্ভ্রান্তশালী চিতপাবন ব্রাহ্মণ পরিবার তাঁর বাবা গণেশ হরি কর্মকার ছিলেন পেশায় ইঞ্জিনিয়ার বার্মার বার্মা কটন কোম্পানিতে তিনি কাজ করতেন তাঁদের পরিবার ছিল শিক্ষিত গতানুগতিক ভাবধারায় না হেঁটে তার বাবা-মা তাঁকে পড়াশোনার ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন

    বার্মায় জন্ম হলেও ইরাবতীর পড়াশোনা এবং বেড়ে ওঠা পুনেতে সাত বছর বয়সে তাঁকে পুনার হুজুরপাগায় একটি আবাসিক স্কুলে ভর্তি করা হয় ১৯২২-তে স্কুলের পড়া শেষ করে তিনি ফার্গুসেন কলেজে দর্শনে অনার্স নিয়ে ভর্তি হন ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি স্নাতক পাশ করেন এরপর দক্ষিণা ফেলোশিপ পেয়ে বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের জি.এস. ঘুরের অধীনে সমাজতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেন তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল দ্য চিতপাবন ব্রাহ্মণস–অ্যান এথনিক স্টাডি ১৯২৮-এ তিনি এম-এ পাশ করেন

এম-এ পড়ার সময় তাঁর বিয়ে হয় ড. দিনকর ধন্দু কার্ভের সঙ্গে ড. দিনকর ব্রাহ্মণ হলেও এই বিয়েটা ইরাবতীর বাবার মনোমতো হয়নি তিনি চেয়েছিলেন রাজপরিবারের কারও সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে ড. দিনকর ছিলেন ডেকান কলেজের রসায়নের অধ্যাপক পরে তিনি ফার্গুসেন কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে বড়ো মেয়ে জই নিম্বকর একজন ঔপন্যাসিক ও গল্পকার ছোটো মেয়ে গৌরী দেশপাণ্ডে খ্যাতনামা মারাঠি কবি ও গল্পকার ছেলে আনন্দ কার্বে পুনেতে আরতি নামে একটি এনজিও চালান তাঁর নাতনি উর্মিলা দেশপাণ্ডেও একজন লেখিকা

প্রসঙ্গত বলার, ড. দিনকর ধন্দু কার্বে ছিলেন ধন্দু কেশব কার্বের সন্তান ধন্দু কেশব কার্বে ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক মহর্ষি কার্বে নামে তিনি বেশি পরিচিত দেশের মহিলাদের শিক্ষা ও প্রগতি নিয়ে তিনি আন্দোলন করেছিলেন বিধবা বিবাহের সমর্থক ছিলেন তিনি শুধু তাই নয় গোদুবাই নামে এক বিধবাকে বিয়ে করেছিলেন গোদুবাই ছিলেন পণ্ডিত রমাবাইয়ের স্কুল সারদা সদন-এর প্রথম ছাত্রী মহিলাদের শিক্ষা বিস্তারে তাঁর ভূমিকা ছিল বিশাল সমাজ সংস্কারমূলক কাজের জনয ভারত সরকার তাঁকে ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতরত্ন সম্মানে সম্মানিত করেন একশ বছর বয়সে তিনি এই সম্মান পেয়েছিলেন

    বাবার মতো সমাজ সংস্কারক না হলেও ড. দিনকর ধন্দু কার্বে স্ত্রীর উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে তাঁকে উৎসহিতই শুধু করেননি, সবরকম সাহায্য নিয়ে তাঁর পাশে ছিলেন দিনকর পাশে না থাকলে ইরাবতীর শিক্ষার পথচলা কখনওই মসৃণ হত না

    ড. দিনকর কার্বে জৈব রসায়ন নিয়ে জার্মানিতে পিএইচডি করেছিলেন তিনি চেয়েছিলেন ইরাবতীকে জার্মানি থেকে পিএইচডি করাতে এই ব্যাপারে বাবার সঙ্গে কথা বলেন তিনি আশ্চর্যের বিষয় যিনি নারী শিক্ষার ব্যাপার নিয়ে সংস্কার আন্দোলন করেছিলেন তিনি ছেলের এই সিদ্ধান্তে রাজি হন না বিদেশে পড়তে যাওয়া খরচাবহুল তাছাড়া ইরাবতীর যা ডিগ্রি তাতে তিনি বিশ্ব বিদ্যালয়ে কাজ পেয়ে যাবেন এই যুক্তি দেখিয়ে তিনি বিরোধিতা করেন কিন্তু দিনকর ইরাবতীকে জার্মানিতে পড়ানোর ব্যাপারে বদ্ধপরিকর ছিলেন নিজের উদ্যোগে ইরাবতীকে জার্মানিতে পড়ানোরর খরচ জোগাড় করেন তাঁকে টাকা ধার দিয়েছিলেন জীবরাজ মেহেতা যিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন সদস্য ছিলেন

ইতিমধ্যে ধন্দু কেশব কার্বে পুনে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ইরাবতীর জার্মানি যাওয়ার তারিখ স্থির হওয়ার পর ড. দিনকর বাবাকে চিঠি লিখে তা জানান এবং বাবার আশীর্বাদ চান কিন্তু ইরাবতীর শ্বশুরমশাই চিঠি দিয়ে জানান যেহেতু এই সিদ্ধান্তে তাঁর মত নেই তাই তিনি কোনো আশীর্বাদ করবেন না

ইরাবতীর জীবনে এ-ছিল এক তিক্ত অধ্যায় শ্বশুর মহাশয়ের এমন আচরণ তিনি মানতে পারেন না ধন্দু কেশব কার্বে নারীশিক্ষার জন্য অনেক আন্দোলন করেছিলেন অনেক মেয়েকে বিদেশে পড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন তার জন্য আর্থিক সংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছেন সেই তিনি নিজের বউমার বিদেশে পড়ার ক্ষেত্রে এমন আচরণ করবেন এটা কিছুতেই মানতে পারেননি তবে স্বামী পাশে থাকায় বিদেশে পড়তে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো সমস্যা হয় না

১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ইরাবতী একাই জার্মানি আসেন এখানে কাইজার উইলহেলম ইনস্টিটিউট অব অ্যানথ্রোপোলজিতে ভর্তি হন ইউজিন ফিসারের আন্ডারে তিনি গবেষণা করেন তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল হিউম্যান হেরিডিটি অ্যান্ড ইউজোনিকস ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন বার্লিন বিশ্ব বিদ্যালয় তাঁকে ডি.ফিল ডিগ্রি প্রদান করে

ডক্টরেট করার পর দেশে ফিরে আসেন ইরাবতী ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে তিনি বোম্বের শ্রমতী নাথিভাই দামোদর থ্যাকারসে (এসএনডিটি) মহিলা বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন শুধুমাত্র ভারত নয় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এটি প্রথম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়। মেয়েদের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করতে মহর্ষি ধন্দু কাশ্যপ ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন ইরাবতী এখানে তিনি ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত কাজ করেন

১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে পুনের ডেকান কলেজে রিডার হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি কর্মজীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি এখানে কাজ করেছেন ডেকান কলেজের সোসিওলজি ও অ্যানথ্রোপলজি বিভাগের প্রধান হিসেবে বেশ কিছু বছর কাজ করেছেন তিনি পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অন্যথ্রপলজি বিভাগ চালু করেছিলেন ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে নয়াদিল্লিতে আয়োজিত জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতিত্ব করেছিলেন তিনি

১৯৫১-৫২তে তিনি ইংল্যান্ডের লন্ডন বিশ্ব বিদ্যালয়ের স্কুল অব অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ থেকে আমন্ত্রণ পান তিনি এখানে থাকার সময় তিনি তাঁর প্রথম বই কিনশিপ অর্গানাইজেশন ইন ইন্ডিয়ার খসড়া রচনা করেন আমেরিকার রকারকেলার ফাউন্ডেশনের ইউম্যানিটিজ ডিভিসন থেকেও আমন্ত্রণ পান তিনি ১৯৫৯-৬০এ তিনি বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন

ইরাবতীর নিজস্ব ভাবনাচিন্তার মাধ্যমে নিজের গবেষণার কাজ করেছেন ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি, সাহিত্য এবং দর্শন প্রভৃতির মাধ্যমে তিনি তাঁর কিনশিপ-এর কাজ করেছেন তিনি মূলত ফিজিক্যাল অ্যানথ্রপলজি নিয়ে কাজ করেছেন পাশাপাশি কালচারাল অ্যানথ্রপলজিতেও তার অবদান ছিল। তাঁর অধীনে পঁচিশজন ছাত্রছাত্রী ডক্টরেট করেছেন। একশোর বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়েছে তাঁর

ইরাবতী একজন ভালো লেখিকা ছিলেন মারাঠি এবং ইংরাজি ভাষায় তিনি অনেক বই লিখেছেন তাঁর গবেষণা এবং লেখায় বারে বারে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন জাতপাত, পারিবারিক সম্পর্ক, ধর্ম, পুরাণ প্রভৃতি নিয়ে তাঁর লেখা কিছু উল্লেখযোগ্য বই হল, কিনশিপ অর্গানাইজেশন ইন ইন্ডিয়া, দ্য ভিলস অব ওয়েস্ট খান্দেশ, মহারাষ্ট্র : ল্যান্ড অ্যান্ড পিপল, যুগান্ত : দ্য এন্ড অব অ্যান এপোক, হিন্দু সমাজ, পরিপূর্তি, সংস্কৃতি, গঙ্গাজল প্রভৃতি যুগান্ত : দ্য এন্ড অব এন এপোক বইটির জন্য ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারাঠি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রথম লেখিকা হিসেবে এই সম্মান পান তিনি  এই গ্রন্থে মহাভারতের কুন্তী, গান্ধারী, ভীষ্ম প্রমুখ প্রধান প্রধান চরিত্রগুলিকে ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরে, সেই আলোয় তাদের উপস্থাপিত করেছেন তিনি বইটি প্রথমে মারাঠি ভাষায় লেখেন পরে ইংরাজি ভাষায় অনুবাদ করেন

ইরাবতী নারী স্বাধীনতার পক্ষপাতী ছিলেন ঘোমটা দিয়ে মেয়েরা ঘরে বসে থাকবে এমন ভাবনার মানুষ তিনি ছিলেন না গতানুগতিক ভাবধারা থেকে তিনি ছিলেন অনেক এগিয়ে পুনের রাস্তায় বাইক চালিয়ে যাতায়াত করতেন তনি কোনো মহিলা বাইক চালিয়ে যাতায়াত করবে, পাঁচের দশকে ব্যাপারটা অনেকটা অকল্পনীয় ছিল আমাদের দেশে একটা সময় মহিলারা স্বামীদের নাম ধরে ডাকা দূরে থাক, তাদের নামও মুখে উচ্চারণ করত না (বাংলায় প্রথম আত্মজীবনী লেখিকা রাসসুন্দরী দেবীর আমার জীবন পড়লে আমরা দেখতে পাই, তিনি স্বামীর সামনে দূরে থাক তিনি স্বামীর ব্যবহার করা ঘোড়ার সামনে এলেও মাথায় লম্বা ঘোমটা দিয়ে থাকতেন।) কিন্তু সেই সময় ইরাবতী স্বামীকে নাম ধরে ডাকতেন স্বামীকে তিনি দিনু বলে ডাকতেন আর দিনকর তাঁকে ইরু বলে ইরাবতী যে সময় বড়ো হয়ে উঠেছেন, সেই সময় নারীরা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নিজেদের সমানাধিকারের দাবি নিয়ে লড়াই শুরু করেছে ইরাবতী বলেছিলেন অধিকারের জন্য যদি লড়াই করতেই তাহলে সমান অধিকারের জন্য কেন করবে? লড়াই হোক আরও বেশি কিছুর জন্য তিনি বলেছিলেন, “Ladies, while fighting with men for rights, why fight for only equal right. Always fight for more right.”

১৯৭০ এর ১১ আগস্ট তিনি মারা যান

পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষতান্ত্রিকতার শেকল ভেঙে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি শিক্ষা ও গবেষণার জগতে নিজের জন্য আলাদা একটা স্থান করে নিতে পেরেছিলেন অ্যানথ্রোপলজির মতো একটা বিষয়, যেখানে মহিলাদের তেমন উৎসাহ ছিল না, সেই বিষয়ে নিজ ভাবনা চিন্তা কেবল গবেষণাই করেননি, পাশাপাশি আগামী প্রজন্মের মহিলাদের কাছে নিজেকে পথিকৃৎ হিসাবে তুলে ধরেছিলেন