Saturday, May 14, 2022

সাহিত্যে গোয়েন্দা : সব চরিত্র কাল্পনিক নয়

 সাহিত্যে গোয়েন্দা : সব চরিত্র কাল্পনিক নয়

সৌরভকুমার ভূঞ্যা

 

গোয়েন্দা গল্প পড়তে ভালোবাসে না এমন পাঠক খুব কম পাওয়া যাবে। বিশেষ করে কিশোর পাঠকেরা গোয়েন্দা গল্পের বেশি ভক্ত। গোয়েন্দা গল্পে আমরা দেখি গোয়েন্দারা খুব তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী হয় আর অত্যন্ত সুকৌশলে বিভিন্ন অপরাধের কিনারা করে ফেলেন। দেশি-বিদেশি সাহিত্যে রয়েছে অসংখ্য বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্রপ্রশ্ন হচ্ছে এইসব গোয়েন্দারা কেবল কি লেখকের কল্পনাপ্রসূত নাকি এদের সৃষ্টির পেছনে কেউ আছেন? এই নিবন্ধে তেমনি কিছু গোয়েন্দার সৃষ্টির আড়ালে থাকা ব্যক্তিকে খোঁজার চেষ্টা করা যাক

    গোয়েন্দা গল্পের আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় আর্থার কোনান ডায়াল সৃষ্ট গোয়েন্দা শার্লক হোমসের কথা। কোনান ডায়ালের সৃষ্টিশৈলিতে এই চরিত্রটি এতটাই জীবন্ত হয়ে উঠেছিল যে মানুষ অপরাধের সমাধান চেয়ে শার্লক হোমসকে ২২১বি বেকার স্ট্রিটের ঠিকানায় চিঠি পাঠাত। আর্থার কোনান ডায়াল এই চরিত্র সৃষ্টিতে দুজন মানুষের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন একজন হলেন জোসেফ বেল, অন্যজন স্যার হেনরি লিটিলজন

    জোসেফ বেল ছিলেন একজন শল্য চিকিৎসক তাঁর সঙ্গে কেনান ডায়ালের পরিচয় হয় ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে এডিনবরা রয়্যাল ইনফারমারিতে তিনি বেলের সঙ্গে কাজ করতেন জোসেফ বেলের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ছিল অসাধারণ ছোটোখাটো ব্যাপার দেখে তিনি বড়ো বড়ো সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন শার্লক হোমসের চরিত্র গঠনে কেনান ডায়াল বেলের এই অসামান্য পর্যবেক্ষণ দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েছিলেন অপরদিকে হেনরি লিটিলজন ছিলেন পুলিশ সার্জেন ও ফরেনসিক এক্সপার্ট জোসেফ বেল পরবর্তী সময়ে লিটিলজনের সঙ্গেও কাজ করেছেন এই দুই চরিত্রের মেলবন্ধনে কোনান ডায়াল শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টি করেছিলেন শার্লক হোমসের নামকরণও বেশ মজাদার কোনান ডায়াল ক্রিকেট ভালোবাসতেন বিখ্যাত দুই ক্রিকেটার Sherwin Shacklock–এর নাম মিলিয়ে তিনি ‘Sherlock’ নামকরণ করেন

    ইয়ান ফ্লেমিং সৃষ্ট বিখ্যাত চরিত্র হল জেমস বন্ড যিনি গুপ্তচর বিভাগের একজন দক্ষ অফিসার ছোটোবেলা থেকে ইয়ান ফ্লেমিং-এর গোয়েন্দা গল্পের ওপর ছিল প্রবল আকর্ষণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইয়ান ফ্লেমিং নৌবাহিনীর গুপ্তচর বিভাগের প্রধান পরিচালকের সহকারি ছিলেন সেই সময় তিনি অনেক গুপ্তচর এজেন্টকে কাছ থেকে দেখতে পেয়েছিলেন এদের মধ্যে একজন ছিলেন দুস্কো পোপোভ পোপোভের রোমাঞ্চকর এবং উত্তেজনাপূর্ণ জীবন, তাঁর অসামান্য কর্মদক্ষতা ফ্লেমিংকে প্রভাবিত করেছিল জেমস বন্ড চরিত্রটি সৃষ্টিতে তিনি পোপোভকে অনুসরণ করেছিলেন তার লেখা ক্যাসিনো রয়েল থেকে জেমস বন্ডের যাত্রা শুরু। বাস্তবেও ইয়ান ফ্লেমিং এই ক্যাসিনো রয়েলে দুস্কো পোপোভের মুখোমুখি হয়েছিলেন যাই হোক, ক্যাসিনো রয়েল লেখা শুরু হলেও তিনি এর গোয়েন্দা চরিত্রটির যুতসই নাম ঠিক করতে পারছিলেন না গোয়েন্দার নামকরণের জন্য তিনি বিস্তর বই ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেন তখনই তাঁর চোখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাখিদের নিয়ে লেখা বই বার্ড অব ওয়েস্ট ইন্ডিজ বইটি প্রসঙ্গত বলার ইয়ান ফ্লেমিং নিজেও পাখি নিয়ে উৎসাহী ছিলেন ওই বইটির লেখকের নাম ছিল জেমস বন্ড নামটি তাঁর বেশ পছন্দ হয় এবং তিনি তাঁর গোয়েন্দার নামকরণ করেন জেমস বন্ড। ফ্লেমিং জেমস বন্ড চরিত্র সৃষ্টিতে যে তাঁকে অনুসরণ করেছেন একথা স্বয়ং দুস্কো পোপোভও জানতেন

    আগাথা ক্রিস্টি সৃষ্ট বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র হল এরকুল পোয়ারো দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে তিনি এরকুল পোয়ারোকে নিয়ে লিখেছেন এই চরিত্রটি সৃষ্টিতে তিনি শার্লক হোমস চরিত্রটি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন পাশাপাশি এইডব্লিউ ম্যাসন সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্র ইনস্পেকটর হ্যানেডর সঙ্গেও পোয়ারোর সাদৃশ্য রয়েছে অগাথা ক্রিস্টি তাঁর গোয়েন্দার নামকরণ করেন দুই গোয়েন্দা চরিত্রের নামানুসারে একজন হলেন ম্যারি বেলক লন্ডেসের এরকুল পোপু এবং অন্যজন হলেন ফ্রাঙ্ক হাওয়েল ইভান্সের মনিয়ের পোয়ারো

    অগাথা ক্রিস্টি সৃষ্ট আর একটি বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র হল মিস মার্পেল এই গোয়েন্দা চরিত্র সম্পর্কে অগাথা ক্রিসিট বলেছেন “The short of old lady who would have been rather like some of my grandmother’s Ealing cronies—old ladies when I have met in so many villages where I have gone to stay as a girl.” তবে এই মার্পেল নামটি তিনি কোথা থেকে নিয়েছেন সঠিক জানা যায় না পেশিরভাগের মতে তিনি নামটি নিয়েছিলেন মার্পেল রেলওয়ে স্টেশন থেকে যেখানে তাঁর নিয়মিত যাতায়াত ছিল অনেকের ধারনা তাঁর বোনের বাড়ির কাছাকাছি মার্পেল হলের পরিবারের থেকে তিনি নামটি নিয়েছিলেন

    রেমন্ড চ্যাডলারের সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্র হল ফিলিপ মার্লো চ্যাডলার বলেছেন তিনি এই চরিত্র কোনো একজনের ভিত্তিতে সৃষ্টি করেননি তাঁর কথায়, “Marlowe just grew out of the pulp. He was no one person.” প্রথমে তিনি চরিত্রটির নাম দিয়েছিলেন ম্যালোরি তবে ছোটোগল্প থেকে উপন্যাস লেখার সময় তিনি ম্যালোরির নাম বদলে রাখেন মার্লো তিনি এই চরিত্রটির নামকরণ করেছিলেন মার্লো হাউসের নামানুসারে ডালউইচ কলেজে পড়ার সময়ে তিনি এই মার্লো হাউসে থাকতেন উল্লেখ্য, এলিজাবেথান লেখক ক্রিস্টোফার মার্লোর নামানুসারে এই বাড়ির নামকরণ হয় মার্লো হাউস

    বিদেশী গোয়েন্দাদের ছেড়ে এবার দৃষ্টি ফেরানো যাক আমাদের দেশের গোয়ান্দের দিকে প্রথমেই আসা যাক শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশের কথায় ব্যোমকেশ এক ভিন্নধর্মী গোয়েন্দা চরিত্র এই গোয়েন্দা চরিত্রটি শরদিন্দু কার আদলে গড়েছেন সে ব্যাপারে সঠিক জানা যায় না। দেশ বিদেশের বহু গোয়েন্দা গল্প শরদিন্দু পড়েছেন, তাদের দ্বারা প্রভাবিতও হয়েছেন কিন্তু ব্যোমকেশ সৃষ্টিতে তিনি তাদের অনুকরণ করেননি আপাদমস্তক বাঙালি করে গড়েছেন ব্যোমকেশকে এই চরিত্রটি খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে লেখকের সঙ্গে তার সাদৃশ্য পাওয়া যায় ব্যোমকেশের বর্ণিত চেহারার সঙ্গে লেখকের চরিত্রের বেশ মিল আছে ব্যোমকেশের মতো শরদিন্দুও জ্যোতিষচর্চায় বিশ্বাসী ছিলেন তাই অনুমান করা যেতে পারে ব্যোমকেশের চরিত্রটির মধ্যে লেখকের নিজস্ব ছায়া অনেকটাই আছে তাছাড়া শরদিন্দু ব্যোমকেশ চরিত্রটিকে তাঁর নিজেরই আত্মকৃতি বলে বলেছেন

    সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র হল ফেলুদা ফেলুদার আসল নাম প্রদোষচন্দ্র মিত্র প্রথমে পদবি ছিল মিত্র পরে বদলে রাখেন দত্ত গোয়েন্দা বা অপরাধমূলক গল্পের প্রতি সত্যজিৎ রায়ের ছিল খুব আগ্রহ স্কুলজীবনেই তিনি শার্লক হোমসের সব গল্প পড়ে ফেলেছিলেন। ফেলুদা চরিত্র সৃষ্টিতে দেখা যায় শার্লক হোমসের ছায়া ফেলুদার মুখেও বেশ কয়েকবার শার্লক হোমসের প্রশংসা শোনা যায় ফেলুদা শার্লক হোমসকে প্রাইভেট ডিটেকটিভদের গুরু বলে খোলাখুলি মন্তব্য করেছেন একথা আসলে সত্যজিৎ রায়ের নিজের কথা তবে একথা ঠিক ব্যোমকেশের মতো ফেলুদার চরিত্রের মধ্যেও ছিল বাঙালীয়ানা

    সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্র হল কর্ণেল কর্ণেল নীলাদ্রি সরকার একজন অবসরপ্রাপ্ত মিলিটারি অফিসার তিনি এক অদ্ভূত চরিত্রের গোয়েন্দা তিনি প্রকৃতি প্রেমিক অর্কিড, পাখি, প্রজাপতি, পোকামাকড় প্রভৃতির প্রতি তাঁর খুব আকর্ষণ কেউ কেউ মনে করেণ কর্ণেল চরিত্র সৃষ্টির পেছনে এরকুল পোয়ারোর ছায়া আছে যদিও মুস্তাফা সিরাজ সে কথা অস্বীকার করেছেন তিনি বলেছেন কর্ণেল চরিত্রটি সম্পূর্ণ আলাদা চরিত্র তবে চরিত্রটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয় একবার হাজারদুয়ারি ঘুরতে গিয়ে তিনি এক পর্যটককে দেখেন সিরাজের নিজের কথায়, ....মুখে সান্টা ক্লজের মতো সাদা গোঁফদাড়ি টকটকে ফর্সা রং পরণে প্যান্ট শার্ট পিঠে আঁটা একটা কিট ব্যাগ বাইনোকুলাররে দূরের কিছু দেখছিলেন মুখ তুলতে গিয়ে টুপি খসে পড়ল আর মাথায় চকচক করে উঠল চওড়া টাক টুপিটা কুড়িয়ে টাক ঢেকে এগিয়ে গেল একটা ধ্ব্সস্তূপের কাছে সেখানে ফুলে ভরা ঝোপ গুঁড়ি মেরে তিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যাপারটা রহস্যজনক........

    প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন টুরিস্টটি সাহেব পরে তার মুখে বাংলা শুনে ভুল ভাঙে বলাবাহুল্য এই প্রকৃতিবিদের আদলে তিনি কর্ণেলের চরিত্রটি গড়েছেন তিনি নিজের মুখেও সেই কথা বলেছেন---ওর মুখে বাংলা শুনে এগিয়ে গেলাম....এই আমার কর্ণেল

    ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সৃষ্টি বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র হল জগুমামা আসল নাম জগবন্ধু মুখোপাধ্যায় তিনি পেশায় বৈজ্ঞানিক, নেশা গোয়েন্দাগিরি এই গোয়ন্দা চরিত্রটি একেবারেই কাল্পনিক নয় একটু খুঁটিয়ে দেখলে আমরা প্রকৃত জগুমামা সহজে খুঁজে পাবো লেখকের সঙ্গে মুখোমুখি আলাপচারিতায় জেনেছি ভাগ্নে টুকলুর গোয়েন্দা গল্পের নেশা মেটাতে লেখক নিজেই শেষমেশ গোয়েন্দা কাহিনী লেখার কথা ভাবেন সেই মতো সৃষ্টি করেন জগুমামা চরিত্রটি গল্পে তার সহকারী ভাগ্নে টুকলু জগবন্ধু মুখোপাধ্যায় একজন বৈজ্ঞানিক বিজ্ঞান ছাড়াও তার টান সাহিত্য ও ইতিহাসের প্রতি জগুমামার স্রষ্টা ত্রিদিবকুমার চ্যাটার্জির প্রিয় বিষয় ছিল সাইটোজেনেটিক্স সাহিত্যের প্রতি লেখকের ভালোবাসার কথা তো আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই পাশাপাশি ইতিহাসও তাঁর প্রিয় বিষয় আর জগুমামার গল্প উপন্যাসে আমরা এখন যে ইলাস্ট্রেশন দেখি, সেই ছবির সঙ্গে লেখকের প্রায় হুবহু মিল তাই একথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে গোয়েন্দা জগুমামা ওরফে জগবন্ধু মুখোপাধ্যায় চরিত্রটি সৃষ্টির আড়ালে রয়েছেন স্রষ্টা নিজেই

    ভগীরথ মিশ্রের গোয়েন্দা কাহিনীর চরিত্র হল টিটু ও মিঠু নামে দুই কিশোর বাস্তবে টিটু লেখকের ভাইপো আর মিঠু তার ভাগ্নের নাম পরবর্তী সময়ে লেখক এই দুই কিশোর চরিত্র বাদ দিয়ে নতুন দুই কিশোর গোয়েন্দার অবতারা করেন---ঋষি ও সুমন পরে এর সঙ্গে যুক্ত করেন রোবট নামে একটি কিকির চরিত্র তিনজন মিলে তিনি নামকরণ করেণ আড়াই গোয়েন্দা ঋষি, সুমন আর রোবট অর্ধেক লেখক ভগীরথ মিশ্র ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের পাণ্ডব গোয়েন্দা গল্পের পঞ্চু নামক কুকুরটির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাঁর গোয়েন্দা গল্পে রোবটকে ঢুকিয়েছিলেন বাস্তবে রোবট ছিল লেখকের পোশা কুকুর

    নারায়ণ সান্যাল সৃষ্ট গোয়েন্দা হল পিকে বাসু যিনি পেশায় ব্যারিস্টার নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন তিনি তাঁর গল্পগুলি বিদেশি গল্পের ছায়ায় লিখেছেন গোয়েন্দা পিকে বাসুর চরিত্রটি গড়েছেন পেরি মেসন-এর আদলে পেরি মেসনের মতো পিকে বাসুও ছিলেন ব্যাচেলার

    বিমল করের গোয়েন্দা হল কিঙ্কর কিশোর রায় সংক্ষেপে কিকিরা কিকিরা অন্যান্য গোয়েন্দা চরিত্রের থেকে একটু আলাদা ধরনের কিকিরার প্রথম আবির্ভাব কাপালিকরা এখনও আছে নামক কিশোর উপন্যাসে কিকিরার মধ্যে দুইজনের ছায়া আছে একজন লেখক নিজে অন্যজন হলেন জাদুকর শিরোমনি হুডিনি লেখক নিজেই বলেছেন, কাপালিকরা এখনও আছে উপন্যাসটি লেখাটি লেখার সময় জাদুকরদের শিরোমনি হুডিনির একটি জীবনী আমায় খুব প্রভাবিত করেছিল হুডিনি জাদুকরদের রাজা ছিলেনআজাবীন তিনি মিথ্যা, শঠতা, প্রবঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছিলেন ভূত, প্রেত, আত্মা ইত্যাদির নাম করে কিছু লোক সাধারণ মানুষদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের ঠকাত হুডিনি এদের ভেল্কিবাজি বারবার ধরিয়ে দিয়েছেন কিকিরা হুডিনির পরম ভক্ত প্রথম প্রথম তিনি ম্যাজিক দেখাতেন কিন্তু বাম হাতে সমস্যা হওয়ায় তিনি ম্যাজিক দেখানো ছেড়ে দেন। সেই অর্থে তিনি আগে ম্যাজিসিয়ান পরে গোয়েন্দা আবার কিকিরার শারীরিক গঠন ও চারত্রিক বৈশিষ্টের সঙ্গে আমরা লেখকের বেশ কিছু সাদৃশ্যও খুঁজে পাই যাই হোক, কিকিরাকে নিয়ে সিরিজ লেখার ইচ্ছে ছিল না লেখকের কিন্তু পাঠকের চাহিদা মেটাতে গিয়ে তাকে একটার পর একটা গল্প লিখে যেতে হয়েছে কিকিরাকে নিয়ে

    এইভাবে আমরা যদি একটু গভীরে অনুসন্ধান করি তাহলে দেখতে পাবো বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্রগুলির আড়ালে অনেকক্ষেত্রেই বাস্তবের কোনো চরিত্রের ছায়া রয়েছে আবার অনেক সময় দেখা যায় স্রষ্টা অন্য কোনো স্রষ্টার সৃষ্টির ছায়ায় নিজের গোয়েন্দা চরিত্রটি তারি করেছেন

    বাস্তবিকিই কোনো স্রষ্টা যখন কোনো চরিত্র সৃষ্টি করেন তখন তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোনো না কোনো চরিত্রকে প্রকাশ করতে চান তার চরিত্রগুলির মধ্য দিয়ে ছোটোখাটো চরিত্রগুলি হয়তো সেভাবে আলোচনায় আসে না তবে এটা অস্বীকার করা যাবে না যে সমস্ত চরিত্রগুলিই সমাজ থেকে নেওয়া স্রষ্টার কল্পনা আর শৈল্পিক দক্ষতায় তা আলাদাভাবে প্রতিভাত হয় আমাদের সামনে

   

No comments:

Post a Comment