উত্তরণ
লেখা দাস মান্না
আকাশের বুক চিরে
সোজা উপরে উড়ে চলেছে একটা
চিল
বাতাসের শিরায় শিরায়
চিত্কার আছড়ে পড়ে টুকরো হয়ে
ছড়িয়ে পড়ছে শোকস্তব্ধ
নির্জন বাতাসে।
লাসকাটা ঘর থেকে বেরোনো
দেহটা
শীতল শ্বাস ফেলে শুয়ে আছে ।
বিষাদের টুকরো গুলো জমাট
বেঁধে অন্ধকার।
পায়ে পায়ে চলা পথের বাঁকের
কাঁটা গাছের আঁচড় খাওয়া
শরীরটা থেকে
রক্ত ঝরছে না আর।
ঘুন পোকার একটানা ঘুর ঘুর
আওয়াজ
তছনছ করছে নিস্তব্ধতাকে।
শিরশিরে হিমেল বাতাস পিছলে
পড়ছে
গাছেদের গা থেকে ।
শীতল শরীর নিয়ে খস খস শব্দ
তুলে
চুপিসারে এগিয়ে চলেছে করাল
ভুজঙ্গ
অন্ধকার পাতার তলায় দুটো
আলোক বলয় ঘুরছে
ডান থেকে বাম, বাম থেকে ডান
প্রতিমুহূর্তে সার্চলাইট
ফেলে খুঁজছে
জীবনের রসদ।
প্রতিমুহূর্তে বিছিয়ে
দিচ্ছে জাল।
বুড়ো বকুলের কোটর থেকে
বেরিয়ে পড়া
ইঁদুর ছানার হারিয়ে যাওয়ার
গল্প।
জমাট জমাট অন্ধকার
থমকে থাকা শ্বাস
বাতাসের ফিসফিস..কানাকানি
ক্রমশ শব্দ গুলো জটিল থেকে
জটিলতর হতে হতে
দুর্বোদ্ধ।
নিঃসাড় পৃথিবীর বুকে কেবল
ঘুর....ঘুর.. ঘুর......
ঘুন পোকার রাজত্ব।
শব্দ গুলো ঘুরতে ঘুরতে
ক্রমশ ছন্দবদ্ধ সুরেলা।
চেতনালুপ্ত জমাট কালো গহ্বর
থেকে জেগে ওঠা
পৃথিবীর মুখ উদ্ভাসিত ।
দীগন্তরেখায় রক্তিম আভা
নূতন দিনের সূচনা ঘোষণা করছে।
পৃথিবীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে
প্রাণের সাড়া জেগে উঠছে ।
পাখিদের কলতান বীণার তারে
ঝংকার তুলছে।
ঘুমাও ঘুনপোকা
ঘুমাও
তোমার ক্লান্ত শরীর বেয়ে
জন্ম নিক
বীজাঙ্কুর।
![]() |
লেখা দাস মান্না
|
No comments:
Post a Comment