স্বজনহারা
শুভ্রাশ্রী মাইতি
স্বজনহারা শোক ধীরে ধীরে
ডালপালা মেলছে বুকের গভীরে।
চারিদিকে ধ্বংস শেষের
নিঃসীম ফাঁকা শূন্যতা।
সবুজ ছায়ার মায়াবী
আশ্রয়গুলোকে যেন চুলের মুঠি ধরে ঝাঁকিয়ে বাঁকিয়ে
ছেঁড়াখোঁড়া ধ্বংসস্তূপে
পরিণত করেছে কোন এক রাক্ষসপুরীর নির্মম দৈত্য।
চিরে যাওয়া আমগাছের মোটা
মোটা ডালগুলো
মৃত্যুশয্যায় আঁকড়ে ধরেছে
উপড়ে যাওয়া পেঁপে গাছের লাশটিকে।
মাটিতে বিছানো ঝরে পড়া আমে
তার শেষ উপহার সাজানো।
আকাশবাণী আর ইউক্যালিপটাস
গাছগুলো রণক্ষেত্রে নিহত সৈনিকের মতো পড়ে আছে রাস্তা জুড়ে।
মধুমাঝির কাঁচা ঘরখানা
মাটির ঢেলার মতো ভেসে গেছে ভরা গাঙে।
তার ল্যাংটো ছেলেটা এক বুক
জলে দাঁড়িয়ে দুটো খাবারের প্রত্যাশায় বাড়িয়ে দিয়েছে সবেধন একখানি থালা।
এদিক ওদিক পড়ে থাকা কালু
ডোমের ঘরের ভাঙা টালিগুলোয়
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কত
স্বপ্নভাঙার টুকরো।
মুখ থুবড়ে পড়া গাছের গুঁড়ির
পাশে রক্তমাখা ভাতের থালার পাশে
মা এখনও জেগে গাছচাপা
সন্তানের ক্ষিদে মেটাবে বলে।
স্বজনশোকের ডালপালাগুলো
বাড়তে বাড়তে
ছু্ঁয়ে ফেলছে ধূসর আকাশ।
চারিদিকে শুধু কাঠ কাটার
অবিরাম শব্দ।
বুকের গভীরে কুঠারটা ক্রমশঃ
রক্ত ঝরিয়ে চলেছে...।
![]() |
শুভ্রাশ্রী মাইতি
|
No comments:
Post a Comment