Thursday, June 18, 2020

আয়না - মঞ্জীর বাগ


আয়না
মঞ্জীর বাগ

আয়নাকে কখনও বয়স জিজ্ঞেস করতে নেই।
আমার সঙ্গে বেলজিয়গ্লাসের আয়নার পরিচয় আজন্ম।
আমার জন্মের গান গাইতে গাইতে মা পরতেন সিঁদুর সকালের প্রথম সূর্যের মতন
জলের ভিতর ঘুমিয়ে থাকা আমি যেন
শিহরনে জেগে সে আয়নাকে ধন্যবাদ দিই
অভিমন্যুর মতো গর্ভ জলেই আমার বহু কিছু শিক্ষা
আবার অসময়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার জন্য
বহু কিছু না শিক্ষা,
প্রতিযোদ্ধারই যুদ্ধপোষাক পরার আগেই প্রস্থানে পথটুকু জেনে নেওয়া ভালো
কুরুক্ষেত্রের অভিমন্যু র অসহায়তাই আমি ও আমরা
জন্মের দিন আমারও মনে হয়েছিল
আভিমন্যুর জেগে থাকা বড় জরুরী
এক অপ্রস্তুত যোদ্ধা হয়তো এভাবেই
আমরা নিজের কাছে সবচেয়ে বেশী অপ্রস্তুত অচেনা
মনে করুন যদি আয়না না থাকতো
তবে নিজের সাথে পরিচয় হতো কি কোনদিন?
আমরা প্রত্যেকেই আশেপাশের লোকের মতো ভেবে কাটিয়ে দিই দিন
রাজবাড়ির আয়নায় আমি আর সে নিজেদের দেখে
এঁকে নিই আলো আগুনের দাহ পর্ব
আমরাই তিনযুগ আগের কথকতা, অবিনাশী গান
বহুরাগচিত্রের রতি আলাপনে বেজেছি
ভেঙে টুকরোকথার উল্কা পাতে অগ্নিকনা
তবুও যাপনের অশ্রুত অনন্ত প্রেমময় গান,আনন্দম্
কঙ্কাবতীর প্রেমগানের প্রতিটি স্বরলিপি ওআয়নায় মোহিত হওয়ার আগেই
এক ভয়ে যেন সে গান ভেঙে দিগন্তের প্রান্তছুঁয়ে
এক নতুনগান,সেইগানে ভেসে আমি আর জল
নতুন এক আনন্দ সুর, অথচ
সেই রাজবাড়ির আয়নাটা আগের মতোই আছে
আয়না এক গোপন ঘর, নিভৃত নিরাবরন সংশ্লেষ
আয়নার সামনে গেলে আমাদের মিথ্যের পোষাক
পরত পরত খুলে যায়
আয়না বিবেক দেওয়ালে ঝোলে
এ কুরুক্ষেত্রে আমাদের অস্ত্র আছে
যুদ্ধ শেষে সন্ধ্যায় নিজেকে দেখার
একটা আস্ত আয়না নেই।

মঞ্জীর বাগ


No comments:

Post a Comment