বেজে যায় ফোন
বিমল মণ্ডল
অপূর্ববাবু সারাদিন লকডাউনের বাজারে বাড়ির এটা-ওটা করে সময় কাটিয়ে দেয়। তার দু'মেয়ে। বিয়ে হয়ে গেছে। জামাইরা আমেরিকায় থাকে তাই বছরে এক আধবার মেয়ে ও জামাই দেখে যায়। অপূর্ববাবু স্কুল মাস্টার এবং বেশ বৃত্তবান।
অপূর্ববাবুর স্ত্রী খুব সুন্দরী। বর্তমানে বয়স হলেও জৌলুশ এখনও আছে। অপূর্ববাবুর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার সময়ও হয়ে গেছে। এই ধরুন লকডাউন কাটলে হয়তো দু'এক মাসের মধ্যে ২০২১-এ অবসর নেবেন। এই বয়সে কিন্তু অপূর্ববাবুর শখ একশো শতাংশ আছে। তাই এই লকডাউনে বউকে ছেড়ে কোথাও যায় না। দু'জন দু'জনকে খুব ভালোওবাসে।
অপূর্ববাবু নেটে মেয়েদের সঙ্গে চ্যাট করেন। আমেরিকার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়। ভালো-মন্দ খবর নেন। মাঝে মাঝে ভিডিও কলিং করেন। কিন্তু সমস্যা হল কয়েক দিন চ্যাটেও কথা হচ্ছে না। ভিডিও কলিংও হচ্ছে না। খুব চিন্তার মধ্যে আছেন অপূর্ববাবু ও তাঁর স্ত্রী।
কয়েকদিন পরের কথা। একদিন সকালে অপূর্ববাবু বাজার গিয়েছিলেন। বাজার থেকে এসে দেখেন স্ত্রী বিছানায় বেলা পর্যন্ত শুয়ে আছে। এমন কোনদিন হয়নি এর আগে। অপূর্ববাবু সোজা বিছানায় গিয়ে দেখলেন তাঁর স্ত্রীর সারা শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। কী করবেন অপূর্ববাবু ভেবে পাচ্ছেন না। কারণ এইসময়ে ডাক্তার পাওয়া বড়ো মুশকিল। আবার করোনার উপসর্গ যদি ধরা পড়ে কি করবে? এই ভেবে অস্থির হয়ে উঠছেন তিনি।
সত্যি সত্যি বিপদ ঘনিয়ে আসে।
একদিন হঠাৎ একটা গাড়ি আসে। অপূর্ববাবুর স্ত্রীকে করোনা হাসপাতালে নিয়ে যায়। অপূর্ববাবুও নিভৃতবাসে। মেয়ে-জামাই ফোন করে। বাড়িতে ফোন বেজে যায়। শুধু ফোনের শব্দ বাইরে ছড়িয়ে...
No comments:
Post a Comment