তিন ভুবনের পার
শুভ্রাশ্রী মাইতি
ওরা তিনজন।
তিনটি পাতা---তিনটি গাছের।
আবেগের খোলা হাওয়ায় পাক খায় নীল আকাশের নীচে।
দেখা হয় একদিন জীবনের পথে।
হাত রেখে হাতে, বন্ধু যে সাথে
শব্দেরা জলছবি যায় শুধু এঁকে।
ওরা ভেসে চলে--অক্ষর আলো স্রোতে।
অক্ষর আলোস্রোতের ঢেউ যখন আছড়ে পড়ে সাহিত্যের বেলাভূমিতে,আবেগ আর অনুভূতির শ্বেতশুভ্র ফেনার সুগন্ধিত অঞ্জলিতে তখন ভরে ওঠে পাঠকের মনের মন্দির। আর এই অক্ষরআলো স্রোতের অন্যতম স্রোত হল কবিতা। কবিতা নিজেই একটি বহমান জীবনের প্রতীক।কবিতা এমনই এক আশ্চর্য কল্পবৃক্ষ যে বৃক্ষের কাছে কবিকে পরিপূর্ণ রূপে সমর্পণ করতে হয় আপন অন্তরাত্মাকে। তবেই বরস্বরূপ পাওয়া যায় পাতার সজীবতা, ফুলের বর্ণময়তা, আর ফলের মধুরতা। সেই আশ্চর্য কল্পবৃক্ষের তিনটি সমর্পিত পাতা হলেন---শিশিরকুমার বাগ, শুভঙ্কর দাস এবং সৌরভকুমার ভূঞ্যা। এঁরা শুধু সাদা পাতায় অক্ষরমালা সাজান না, নিজেদের সুবাসিত অক্ষরফুল করে তুলে অঞ্জলি দেন কবিতার সুসজ্জিত বেদীমূলে। এমনই এক সুভাষিত অঞ্জলির অর্ঘ্য হল-‘তিনাঞ্জলি'--এক সবান্ধব কবিতা সংকলন। প্রচ্ছদের দু'মলাটের ভেতর তিন কবির এ এক উজ্জ্বল মননযাত্রা--যা ভাবে-ভাবনায় এক চিরস্হায়ী ছাপ রেখে যায় পাঠক হৃদয়ে।
প্রথম পর্বে রয়েছে কবি শিশির কুমার বাগের লেখা আঠারোটি কবিতা যেখানে সহজিয়া কবি দিনযাপনের শত সহস্র ব্যস্ততার মধ্যেও নিমগ্ন থাকেন একটুকরো খোলা বারান্দার খোঁজে। এই খোলা বারান্দা হল কবির খোলা মন যে মনের দর্পণে জীবন, জগত ও অহমের ঘাত প্রতিঘাতে উদ্ভূত অভিজ্ঞতার মধ্যে নিহিত থাকে কবিতার জন্মবীজ। এখানেই তিনি খুঁজে পান---
‘নিজের মতো করে বেঁচে থাকার
বেড়ে ওঠার একটু অবকাশ।’
খোলা বারান্দা আসলে কবিমনের মুক্ত আকাশ--যে আকাশে তাঁর মনের ইচ্ছেপাখিগুলি স্বাধীন ডানা মেলে পাড়ি দিতে পারে আলোর লম্বা উড়ান কারণ
‘বাইরে এলেই অনন্ত আলোর উদ্ভাস
অসামান্য বাতাসের অমৃতপরশ।'
এই অনন্ত আলোর উদ্ভাসই তো কবিতা।
তাঁর সহজিয়া জীবনচর্যায় স্বপ্নের কল্পকাজল মেখে উঁকি দিয়ে যায় এক ছিমছাম ঘরের ছবি যেখানে---
‘একটা বারান্দা,ছাদ থেকে দোল খাবে ডুরে পাড় শাড়ি'।
এই সহজিয়া জীবনচর্যাই তো কবির প্রাণভোমরা যার স্বতঃস্ফূর্ত সুরের দোলায় ঢেউ ওঠে পাঠক হৃদয়ে। কবির কল্পনায় তাঁর বাড়ির দরজা যেন হয়ে উঠেছে তাঁর মনের জলআয়না--যে আয়নায় নিবিড় নিমগ্নতায় কবি ভাবে, ভাবনায় নির্মাণ করে চলেন নিজেকে--
‘আমার দরজাখানা আমাকেই পথ করে দেয়।'
সমুদ্র, নদী, পাহাড়, খোলা মাঠের বিশালতায় তিনি খুঁজে পান আলো পথের হদিস, যে পথে---
‘খুচরো ব্যথারা মুখ লুকিয়ে নেয়,
সামান্য স্বার্থগুলো হাওয়ায় মিলিয়ে যায় তুলো তুলো মেঘেদের মতো। '
এই পথের ধুলোই লেখে অনন্ত জীবনের সন্ধান।কারণ তিনি জানেন,
‘আসলে পথটাই জীবন।'
আবার, অন্তর্মুখী কবির সমাজচেতনা প্রখর হয়ে ওঠে, যখন বস্তুনির্ভর সভ্যতার মুখরোচক জীবনে অভ্যস্ত প্রতিবাদহীন মানুষকে কটাক্ষ করে কবি বলে ওঠেন
‘বৃষ্টি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।'
বা,
‘দরজা বন্ধ করে সবাই মগ্ন আছে নিজের জগতে--
বাইরের আলো হাওয়ার প্রবেশ নিষেধ।'
তাই কবি আহ্বান জানান চিরশুদ্ধ অগ্নিকে যা সমস্ত কালিমা দূর করে হৃদয়ে জ্বালিয়ে দেবে মানবতার উজ্জ্বল প্রদীপশিখা,
‘ও আগুন,তুমি আজ উষ্ণতা হও।'
এই আগুন আসলে পবিত্র অক্ষরমন্ত্রের উচ্চারণ। আর এই অক্ষরমন্ত্রই হল কবিতা যা জড় থেকে চেতনে, গরল থেকে অমৃতে আর মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তরণের পথে আশ্চর্য আলোর মতোই দীপ্যমান।
জীবনের সঠিক স্টেশনে নামতে না পারার আক্ষেপ, ফুল-পাখি-মেঘ-রোদ্দুরের সংসারের গোপন ব্যথার দীর্ঘ পথ পার হয়ে কবিকন্ঠে সঞ্চারিত হয়ে ওঠে আশার আলো--
‘তুমি যখন সাঁকোর এ প্রান্তটা মেরামত করতে শুরু করেছ,
তখন নিশ্চিত জানবে ও প্রান্তেও স্বপ্ন বোনার কাজ শুরু হয়ে গেছে'।
এইভাবে সহজিয়া কবি তাঁর কবিতার জাদুকাঠির ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেন পাঠকের হৃদকমলের বোধ আর চিন্তার পাপড়িগুলি।কারণ কবি বিশ্বাস করেন,
‘পাপড়ি খুলতে থাকাটাই জীবন--খুলে যাওয়াটা নয়।'
দ্বিতীয় পর্বে আছে কবি শুভঙ্কর দাসের লেখা আঠারোটি কবিতা যা ভাবে ও ভাবনার গভীরতায় পাঠক হৃদয়কে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। কবি শুভঙ্করের কবিতা যেন এক আত্মমগ্ন সাধকের অন্তর্গত সাধনা। সীমিত অথচ পিনদ্ধ শব্দের চমৎকার ব্যবহার,ব্যঞ্জনা ও বিষয়বস্তুর রকমারি অভিনবত্ব এবং ভাবের গভীরতা তাঁর কবিতাগুলির বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তাঁর কবিতার সংহত চেতনা কবিতাগুলিকে যে শুধু বিশেষ প্রাণময়তা দান করে, তাই-ই নয়, আপাত জড়ের বলয় ভেঙে তাকে সঞ্চারিত করে কবিতা পাঠকের চিন্তা ও চেতনায়। এখানেই তাঁর কবিতা বিশিষ্টতার দাবী রাখে।
আঠারোটি কবিতা ঘিরে ছড়ানো আছে বেশ কিছু চরণসিদ্ধ পংক্তি যা মণি মাণিক্যের ঝলমলানো দ্যুতি নিয়ে পাঠকহৃদয়কে মোহিত করে। যেমন---‘মাঠে মাঠে শস্য নয়,প্রণাম ফলে আছে' (এক ভুবনের ভার), ‘পাকস্হলীর থেকে সুপ্রাচীন পান্ডুলিপি আর হয় না'(ব্যঞ্জনবর্ণ), ‘সেভাবে দেখলে ছাদে যাওয়ার দরজাটাও প্রেমিকা হতে পারে(প্রেম), ‘বুকের মধ্যে বাগান হয়েছে কবিতা'(শ্রাবণেষু) ইত্যাদি।
কবি শুভঙ্করের কবিতায় প্রেম এসেছে হৃদয়ের এক অনাগত আলোর দূত হিসেবে যেখানে দয়িতার কাছে চোখের জলে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণই হল ভালবাসার শেষ কথা। প্রেমিকার প্রতি কবির এই আকাঙ্ক্ষা কেবল শরীরী নয়, আবেগ-অনুভূতির তপোবনীয় পবিত্র ভালবাসায় প্রেমিকা হয়ে ওঠে তাঁর নিজের আরাধ্য আবেশ---
‘যাকে ভালোবাসো,সেও জানে না
ভালবাসায় আসলে নিজেই আরাধ্য,
নিজেরই আবেশে গোপন করা অনুভব,নতুন দেশ।'
ভালোবাসা তাঁর কাছে সেই মোহনবাঁশি যাতে সুর তুলতে হলে চাই বুকের পোড়া শ্বাস, দহনের অশ্রু। অভ্যাসের আকাশে উড়তে উড়তে, অপেক্ষার আগুনে পুড়তে পুড়তে, আর কল্পিত স্পর্শের গভীরতায় ডুবতে ডুবতে, তাঁর সমস্ত অনুভূতির পরতে পরতে মিশে থাকে তাঁর সর্বস্ব সর্বনাম। তাই প্রেমিক কবি বলে ওঠেন---
‘প্রাপ্তি তো ছেলেমানুষ, ভালোবাসা তো অপ্রাপ্তিতে
পরিণত,মাথা উঁচু এবং অশেষ।'
জীবন তাঁর কাছে যেন জেব্রা ক্রসিং যেখানে অন্ন-শাক-মাছের গন্ধ গায়ে মেখে গতজন্ম আর পরজন্মের মাঝখান দিয়ে এগোতে হয় জন্মান্তরের দিকে---
‘খড়ের প্রতিমার স্তন,পালাগানের সস্তা মেকাপ,নন্দনাচের
সব পোশাক বিলিয়ে,হাওয়াকল হয়ে ঘুরে ঘুরে,আয়ুবেলুন কিনে কিনে
জন্মান্তরের দিকে গুটিগুটি পায়ে এগোতে হয়...।’
তাঁর মরমী লেখনীর জাদুতে কান্নায় ফুটে ওঠে কমলহীরের দ্যুতি, মুখের হাসি হয়ে ওঠে সূর্যাস্তের আলো--যে আলোর হাসি ছুঁয়ে রাত্রি হয়ে যায় দিন, জোড়া লাগে ভাঙা আয়নায় প্রতিফলিত টুকরো টুকরো মুখচ্ছবি। প্রণামের মুদ্রায় কবি আনত হন জীবনের কাছে। সম্পর্কে, সম্মানে নির্জনতা পিয়াসী কবি আত্মসমীক্ষার আশ্চর্য দর্পণের সামনে দাঁড়িয়ে বলে ওঠেন--
‘সম্পর্কে বা সম্মানে,প্রকাশ্যে অথবা প্রার্থনায় অতিরিক্ত ভিড়ও এক ধরণের পাপ।'
সমাজের মধ্যে থেকেও তিনি তৈরি করেন এক অদ্ভুত দেখার চোখ, এক উর্বর পলিমাটির মন আর নরম কচিপাতা হৃদয়। আবার অন্যায় দেখলেই তাঁর কলম হয়ে ওঠে বর্শার মতোই তীক্ষ্ণ যার এক খোঁচায় জন্ম নেয় সেই সত্যবাদী শিশু---‘যে মাখন ও মিডিয়াকে দুহাতে লোফালুফি করতে করতে মাইক ধরে চেঁচায়---পাবলিক তোর পতাকা কোথায়?'
নিজের দেশ, নিজের মাটি খোঁজার আকুলতায় একদিকে যেমন তাঁর কবিতায় মহেশ মুন্ডা, হোসেন মিঞা আর উমেশ সিং এক হয়ে ওঠে পরিচয়হীনতায়, অন্যদিকে তেমনই ফেজটুপি আর তুলসীতলার বিভেদ ঘুচিয়ে কবির চোখে ভাস্বর হয়ে ওঠে এক নতুন দেশ, নতুন দিনের ভালবাসার ছবি। এইভাবে কবিতার পর কবিতায় কবির অনুভবী লেখনী সত্যদ্রষ্টা ঋষির আধ্যাত্মিকতায়, দার্শনিক ভাবের গভীরতায়, নাগরিক সমাজচেতনায় ছুঁয়ে চলেন বোধ আর মননের এক একটি সোপান। কবিতার অনন্ত ঢেউ এসে লাগে হৃদয়তটে...।
‘তিনাঞ্জলি' কাব্যগ্রন্হের শেষ অংশটিতে কবি সৌরভকুমার ভূঞ্যার ১৬ টি কবিতার ডালি এক আশ্চর্য বর্ণময় জীবন দ্যোতনায় জারিত। যে কোন কবিই তাঁর সৃজনক্ষমতার অলৌকিক কলমে ঈশ্বরের মতোই অমিত শক্তিধর। জীবনের মেঘ-রোদ-বৃষ্টি গায়ে মাখতে মাখতে জন্মান্তরের অলৌকিক আখ্যানে অক্ষরই হয়ে ওঠে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রতিভূ। তাই কবি বলে ওঠেন---
‘শব্দের বাগানে অক্ষর ঈশ্বর হয়।
...সময়ের টুকরো টুকরো ক্যানভাসে
জেগে ওঠে ঈশ্বরের মুখ, প্রতিবিম্বের মতো।'
শব্দ হল ব্রহ্ম। টুকরো টুকরো জীবন মায়ায় জড়িয়ে থাকা ধুলোমাখা শব্দদের কবি আদর করে তুলে নেন নিজের কোলে। অনুভবের আদরে,আবদারে তা হয়ে ওঠে একান্তভাবে কবির নিজস্ব উচ্চারণ যা একজন কবিকে সময়ের হাত ধরে পৌছে দেয় কাল থেকে কালান্তরে---
‘একান্ত আমার শব্দগুলো সেতু রচনা করে
আমাকে জাগিয়ে রাখে সময়ের পাড়ায়।'
কবি সৌরভের কবিতায় বার বার ফুটে ওঠে বর্ণমালার আশ্চর্য, অপরিমেয় ঋণ--যে ঋণ তাঁকে জাগিয়ে রাখে এই অন্ধকার পৃথিবীতে এক স্হির বিশ্বাসে---
‘বিশ্বাসী বর্ণমালায় একদিন তুমি জ্যোৎস্না লিখেছিলে
জেগে থাকে তবু এক সেতুহীন,আশ্চর্য আলিঙ্গন।'
পুরানো অ্যালবামের স্মৃতিময়তায় ধুলোমাখা রাস্তা ধরে, মাটির সোঁদা গন্ধ বুকে মেখে কবির হৃদয় বার বার ফিরে যায় নিষ্পাপ শৈশব আর দামাল কৈশোরকে ছোঁয়ার আকুলতায়।কিন্তু বাইরের বাস্তব পৃথিবী তাঁকে বিছিন্ন করে রাখে মেঘ-রোদ-বৃষ্টির মেঠো ঘর থেকে---
‘বৃষ্টি এসে ছুঁতে চায় রিক্ত শরীর
কাঁচের পাল্লায় বিছিন্ন বাইরের পৃথিবী।'
বন্ধ দরজায় করাঘাত করে দমবন্ধ জীবন থেকে কবি মুক্তি খোঁজেন অক্ষরে অক্ষরে---
মহাবিশ্বের প্রকান্ড বৈঠকখানায়
অদৃশ্য দরজায় জাগে মুক্তির হাহাকার।'
কবি যখন তাঁর শরীরে মেখে নেন মাটি-জল-সবুজের ঈশ্বরীয় স্নেহপরশ তখন প্রকৃতি হয়ে ওঠে কবিতা। শব্দের হাসি, কান্না, স্বপ্ন, বেদন জমতে জমতে প্রাণ পায় চিন্ময়ী মূর্তি।
‘মাটি-জল-সবুজের সাথে গড়ে তোলে মিলনের সেতু
প্রকৃতির বুকে স্বপ্নেরা সাজায় নতুন সংসার।
কান্নারা ঈশ্বর হয়ে ওঠে।'
দুটি মানুষের কথা,হাসি,স্পর্শের সুরে সুরে গড়ে ওঠে সম্পর্কের সূক্ষ্ম সেতু। ভালোবাসার আলোময় স্পর্শে পৃথিবীর বুকে তখন নেমে আসে স্বর্গের পবিত্রতা। অথচ আমরা মনের গভীর প্রদেশের কাটাকুটি খেলায় সবসময় নিজেকে জেতাতে চাই বলেই
‘সম্পর্ক ভাঙতে ভাঙতে আমরা গবেষক হয়ে উঠি' কত সহজে।
অথচ আমরা জানি---
‘হাত বাড়ালেই দূরত্ব কমে যায়,
একটুকরো হাসিতে বন্ধ হয় অনেক রক্তক্ষয়
ভালোবাসলে এই পৃথিবী স্বর্গ হয়ে ওঠে।'
বাস্তবের এত আবিলতা সত্ত্বেও আশাবাদী কবি দিনরাত্রির সমস্ত সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তকে আলোয় রাঙিয়ে তৈরি করতে চান আগামী পৃথিবীর পথ--যে পথের থাকবে একটি নির্দিষ্ট গন্তব্য---
‘একটি গন্তব্য চাই
চাই ওঠা-নামার একটি গল্প।'
এই গন্তব্যই হল মানবতার পাতা ছাওয়া কুটির---যেখানে থাকবে না কোন বারুদগন্ধ,যেখানে আঁকা থাকবে না কুরুক্ষেত্রের রক্তের দাগ, যেখানে মৃত্যুর কঠোর কঠিন শীতলতাতেও জেগে থাকবে জীবনের ভূত ও ভবিষ্যত--যেখানে মানুষ আর দেবতা এক হয়ে যাবে কবিতার হাত ধরে।
কবিতা তো শুধু কতকগুলো কালো কালো অক্ষরের সমষ্টি নয়, কবিতা হল এক জীবন্ত অস্তিত্ব যেখানে আবেগ আর অনুভূতির অনন্য ভাবরসে জারিত হয়ে এক একটি শব্দ হয়ে ওঠে অমোঘ ও জাগ্রত। আর এই জাগ্রত কবিতারই অপূর্ব সমন্বয় এই ‘তিনাঞ্জলি' কাব্যগ্রন্থ। দিনের শেষে তা শুধু দুমলাটের সুন্দর প্রচ্ছদের মধ্যেই বন্দী হয়ে থেকে যায় না, তার এই আশ্চর্য অণুরণন সঞ্চারিত হয় মন থেকে মননে, চিত্ত থেকে চিন্তনে।এখানেই এই কাব্যগ্রন্থের সার্থকতা। সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদ ও প্রায় নিখুঁত প্রকাশনার জন্য ‘কবিতিকা'র কর্ণধার কমলেশ নন্দও এই নান্দনিক সার্থকতার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে রইলেন সাহিত্যের অঙ্গনে।
সবান্ধব কবিতা সংকলন---তিনাঞ্জলি
শিশিরকুমার বাগ, শুভঙ্কর দাস, সৌরভকুমার ভূঞ্যা।
প্রকাশনা--কবিতিকা।
মূল্য---১৫০ টাকা।
No comments:
Post a Comment